সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সমগ্র 1.2 Apk
Rate saved, Thank!
4.8 (1 votes)
Description of সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সমগ্র
• সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
বাংলাভাষাভাষী পাঠককে গত অর্ধশতাব্দী সময়কাল যিনি মুগ্ধ করে রেখেছিলেন তার সৃষ্টির কলমের যাদুতে তিনি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি অসামান্য কবি, অতুলনীয় গদ্য লেখক। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, সাংবাদিক ও নিবন্ধকার এই জনপ্রিয় সাহিত্যিকের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের বৃহত্তর ফরিদপুরের তৎকালীন মাদারীপুর (বর্তমানে জেলা) মহাকুমায়। আজীবন তিনি জন্মমাটির পিছুটান তীব্রভাবে অনুভব করেছেন বলেই তাঁর নানা রচনায় পরিচয় পাই। প্রিয় লেখকের স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। উল্লেখ্য যে, বাংলা কথাসাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে কলকাতায় নিজ বাসায় আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। স্বনামে ও নানা ছদ্মনামে লেখনীর অসাধারণ জাদুশক্তি দিয়ে তিনি এপার-ওপার বাংলার সাহিত্যপ্রেমীদের গল্প, কবিতা, উপন্যাসের রসে মাতিয়ে রেখেছিলেন। বহুমাত্রিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন যেমন একজন অসাধারণ লেখক, ছিলেন দয়ালু এবং সেইসাথে উষ্ণ হৃদয়ের একজন প্রাণবন্ত আড্ডাবাজ মানুষ। ‘আত্মপ্রকাশ’ উপন্যাস লিখে বাংলা সাহিত্য জগতে আত্মপ্রকাশ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের৷ দুশোরও বেশি বই লিখেছিলেন৷ কবিতা ছিল তাঁর প্রথম প্রেম৷ কৃত্তিবাস’ পত্রিকার সম্পাদক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বাঙালির মননে তাঁর কবিতা, গল্প, উপন্যাস দিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন৷
বাংলাদেশের অকৃত্রিম স্বজন এ বন্ধুর মৃত্যুতে দুই বাংলায় যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ হবার নয়। যতদিন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি থাকবে, ততদিন সুনীল বাংলার আকাশে- ভাষায়- সংস্কৃতিতে অমর হয়ে থাকবেন।
• লেখাপড়া
সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম বাংলাদেশের বৃহত্তর ফরিদপুরের (বর্তমানে মাদারীপুর জেলা) মাইজপাড়া গ্রামে। প্রয়াত কালীপদ গঙ্গোপাধ্যায় ও মীরা গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘরে জন্ম নেয়া সুনীল মাত্র চার বছর বয়সেই কলকাতায় চলে আসেন। সেখানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ, দমদম মতিঝিল কলেজ ও সিটি কলেজে লেখাপড়া করেন। কলেজের পাঠ চুকানোর পর ১৯৫৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি নেন তিনি। এরই মধ্যে লেখালেখির সঙ্গে সম্পৃক্ততা গড়ে ওঠে সুনীলের। ১৯৫৩ সাল থেকে তার সম্পাদনায় প্রকাশ হতে থাকে সাহিত্য পত্রিকা কৃত্তিবাস। আর এই পত্রিকাই পরবর্তীতে হয়ে ওঠে নতুন কাব্যধারার অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক। সেই সময় ভারতে ‘হাংরিয়ালিজম’ নামের সাহিত্য আন্দোলনে যারা যুক্ত হয়েছিলন, সুনীল ছিলেন তাদেরই একজন। সুনীলের লেখা ‘নিখিলেশ’ আর ‘নীরা’ সিরিজের কবিতাগুলো তরুণদের মুখে মুখে ছিল বহুদিন। সুনীলের প্রথম কবিতা ‘একটি চিঠি’ প্রকাশিত হয় ১৯৫১ সালে, দেশ পত্রিকায়। বয়স তখন ১৭ বছর। সে বছরই ‘আগামী সাহিত্য’ নামের একটি সাহিত্যপত্রের সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত ‘পঁচিশ বছরের প্রেমের কবিতা’য় তার লেখা ‘তুমি’ কবিতাটি প্রকাশের পর আলোচনায় উঠে আসেন সুনীল। রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে তরুণ সুনীল পর্যন্ত খ্যাতিমান কবিদের কবিতা ঠাঁই পায় ওই সঙ্কলনে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৮ সালে। একই নামে পরে একটি উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। প্রথম কবিতার বই প্রকাশের প্রায় এক দশক পর ১৯৬৬ সালে বাঙালি পাঠকের হাতে আসে সুনীলের প্রথম উপন্যাস ‘আত্মপ্রকাশ’। আত্মপ্রকাশের পর গল্প বলিয়ে হিসেবে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ‘দেশ’ পত্রিকায় চাকরির সুবাদে প্রচুর ফিচার, বই আলোচনা, রম্য লিখতে হয়েছে তাঁকে। লিখেছেন ছবির দেশে কবিতার দেশের মতো চমৎকার সব ভ্রমণ কাহিনি।
• ছদ্মনামে
নীললোহিত, নীল উপাধ্যায় আর সনাতন পাঠক ছদ্মনামে লিখতেন অজস্র। তবে তাঁর নীললোহিত ছদ্মনামটিই বেশি বিখ্যাত। নীললোহিত নামে তিনি যে উপন্যাস বা গল্পগুলো লিখেছেন সেগুলোর অধিকাংশের নায়ক নীললোহিত নামে সাতাশ বছরের এক তরুণ। যার পায়ের তলায় সর্ষে। যে খোলা চোখে, খোলা মনে দেখে জীবনকে। নীললোহিতের সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এক চমকপ্রদ সাক্ষাতের বর্ণনাও রয়েছে ভ্রমণকাহিনি তিন সমুদ্র সাতাশ নদীতে। নীললোহিত, সনাতন পাঠক, নীল উপাধ্যায় ছদ্মনামে সুনীল লিখে গেছেন ভ্রমণ কাহিনী, গোয়েন্দা গল্প, কখনোবা শিশুতোষ সাহিত্য। ভারতের জাতীয় সাহিত্য অ্যাকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর অ্যাকাদেমির সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সাহিত্যে সার্থকতার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮২ সালে বঙ্কিম পুরস্কারের পাশাপাশি ১৯৭২ ও ১৯৮৯ সালে দুই বার আনন্দ পুরস্কার পান। ২০১১ সালে দ্য হিন্দু লিটারেরি পুরস্কারসহ জীবনভার বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন সুনীল। বরেণ্য এই কথা সাহিত্যিককে ২০০২ সালে সাম্মানিক পদ ‘কলকাতার শেরিফ’ হিসাবে নিয়োগ দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার।